সফল বাংলাদেশ

সফল বাংলাদেশ: সব সফলতার খবর আলোচনা হোক গর্বের সাথে

আমরা এখ্ন আমাদের নিজ ডমেইনে (www.bdsuccess.org)

আনন্দের সাথে জানাচ্ছি

 

আমরা আমাদের নিজ ডমেইন

http://www.bdsuccess.org

থেকে সকল কার্জক্রম পরিচালনা করছি।


সাইটির ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ ও সার্বিক সায়তা কামনা করছি।

Apple touch icon

সাইটিতে যেতে উপরের লোগোটিতে ক্লিক করুন

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

চার জাতির গ্যাস পাইপলাইনে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ

NewImage

মানবজমিন ডেস্ক: তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তান ও ভারত গ্যাস কেনাবেচা সংক্রান্ত চুক্তি সই করার পর এবার বাংলাদেশ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর দ্বারস্থ হয়েছে। বাংলাদেশ ৪ জাতির ওই গ্যাস পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে এডিবি’র কাছে চিঠি লিখেছে বাংলাদেশ। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন

পাকিস্তান টুডে। ‘বাংলাদেশ ওয়ান্টস টু ফিট ইন্টু দ্য পাইপলাইন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- কি পরিমাণ গ্যাস আমদানি করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এর জবাবে তিনি বলেছেন, তাদের চাহিদা অল্প। যেহেতু আফগানিস্তান তাদের চাহিদার অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তা বাংলাদেশকে দেয়া যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এই পাইপলাইনের কাজ ৪ জাতির মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশ এতে যুক্ত হতে পারে তার পরে। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে একক উদ্যোগে। ইরান ও পাকিস্তানের (আই-পি) গ্যাস পাইপলাইন সম্পন্ন হয়েছে যৌথ উদ্যোগে। কিন্তু চার জাতির এ প্রকল্প সেভাবে হবে না। ১৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইনের নির্মাতা উদ্যোক্তা এরই মধ্যে খোঁজা শুরু হয়েছে। এতে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ যদি এতে যুক্ত হয় তাহলে পাইপলাইন বিস্তৃত করে ২৫০০ কিলোমিটার করা হবে। এ পাইপলাইনে এরই মধ্যে ৭ হাজার কিলোমিটার ব্যবহার করে গ্যাস সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। চূড়ান্তভাবে মূল উদ্যোক্তা নির্বাচন করার পর এ প্রকল্পের প্রকৌশলগত ডিজাইন নিয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে হবে ২০১৭ সালের মধ্যে। আইপি গ্যাসের দাম নিয়ে দর কষাকষি প্রসঙ্গে সূত্র বলেছে, এ প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হবে। কারণ ইরানের গ্যাসের চেয়ে তুর্কমেনিস্তানে গ্যাসের দাম কম। পাকিস্তান যদি অন্য কোন উৎস থেকে কম দামে গ্যাস কিনতে পারে সেক্ষেত্রে আইপি চুক্তিতে গ্যাসের দাম নিয়ে সমঝোতার একটি অংশ রাখা হয়েছে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার, ২৪ মে ২০১২

কূটনৈতিক রিপোর্টার: সবার জন্য টেকসই জ্বালানি-শীর্ষক জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত এবং ‘সাসটেইনেবল এনার্জি ফর অল’ ইনিশিয়েটিভের সিনিয়র উপদেষ্টা লুইস গোমেজ গতকাল সচিবালয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান। সাক্ষাৎকালে বান কি মুনের উদ্যোগ সম্পর্কে তার একটি লিখিত বার্তাও হস্তান্তর করা হয়। ওই বার্তায় পৃথিবীকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তার এ উদ্যোগ বলে জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। সবার জন্য জ্বালানি নিশ্চিত করা, বিশ্বের জ্বালানি দক্ষতা দ্বিগুণ করা এবং চাহিদার অর্ধেক নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আহরণ করার জন্য তার এ উদ্যোগে রাষ্ট্রসমূহ আশাব্যঞ্জক সাড়া দেবে বলেও আশা করেন বান কি মুন। বিশেষ উদ্যোগে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করায় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান পরিবেশমন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী অপরিকল্পিত জ্বালানি ব্যবহারের কারণে পৃথিবী ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শিল্পোন্নত দেশসমূহে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে একদিকে যেমন শক্তির অপচয় হচ্ছে তেমনি উত্তপ্ত করছে সৌরমণ্ডলকে। এতে প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি ত্বরান্বিত হচ্ছে। এর শিকার হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মোট  জ্বালানির ৭ থেকে ৮ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আহরণ করছে। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে এর হার আরও ১০-২০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য কাজ চলছে। আগামী দিনের সব উন্নয়নের চালিকাশক্তি হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। বিশ্বকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের এ উদ্যোগে ১১৮টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ও সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশাবাদী জাতিসংঘ মহাসচিব। নতুন প্রজন্মকে একটি বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দিতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এ উদ্যোগ সহায়ক হবে বলেও আশা করেন তিনি।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের জ্বালানী চুক্তি

গ্যাযপ্রম রাশিয়ার বৃহত্তম জ্বালানী কোম্পানী

বাংলাদেশের কয়েকটি গ্যাস ক্ষেত্রে কূপ খননের লক্ষ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান গ্যাযপ্রম বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় প্রায় বিশ কোটি মার্কিন ডলারের এক চুক্তি সই করেছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম জ্বালানী কোম্পানী গ্যাযপ্রম এই প্রথম বাংলাদেশে জ্বালানী খাতে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি করলো।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় জ্বালানী সংস্থা পেট্রোবাংলার তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড এবং জ্বালানী অনুসন্ধান এবং উত্তোলনকারী সংস্থা বাপেক্সের সাথে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করে গ্যাযপ্রম।

চুক্তির আওতায় গ্যাযপ্রম মোট ৬ টি গ্যাসক্ষেত্রে ১০ টি কূপ খনন করবে ।

বাংলাদেশের পক্ষে এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং গ্যাযপ্রমের পক্ষে সংস্থাটির উপ-মহা ব্যবস্থাপক ইয়ুরি স্কক চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন।

নতুন সহযোগিতার শুরু

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপর রুশ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলেও দীর্ঘদিন জ্বালানী ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে কোন চুক্তি ছিল না।

রাশিয়ার সঙ্গে এটি সহযোগিতার শুরু এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে চলবে

হোসেন মনসুর, চেয়ারম্যান, পেট্রোবাংলা

“শুধুমাত্র দশটি কূপ খনন করেই শেষ নয়। তারা এখানে তাদের জ্বালানী বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের জন্য একটি ইনস্টিটিউট করবে। সেজন্যে কিছুদিনের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এটি সহযোগিতার শুরু এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে চলবে।”

চুক্তি অনুযায়ী, কূপ খননের জন্য এলসি খোলার ২০ মাসের মধ্যে এর কাজ শেষ করা হবে।

গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা এবং অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

তারা বলেন, বাংলাদেশে গত প্রায় আড়াই বছরে তেরটি গ্যাসকূপ খনন করা হয়েছে এবং এখন আরো দশটি কূপ খনন করা হলে গ্যাসের উৎপাদন আরো অনেক বাড়বে বলে তারা আশা করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মি. স্কক ভবিষ্যতে বাংলাদেশে গ্যাযপ্রমের কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মি. স্কক বলেন, “আমরা আশা করি, বাংলাদেশে পেট্রোবাংলার সাথে গ্যাস কূপ খননের এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র একটি শুরু। বাংলাদেশের জ্বালানী পেট্রোবাংলা সাথে এই অংশীদারিত্ব থেকে আমরা সিসমিক সার্ভে এবং স্থলে ও সমুদ্রে কূপ খননসহ পূর্নমাত্রায় জ্বালানী অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজ করার জন্য প্রস্তুত। এটি শুধু বাংলাদেশের হাইড্রোকার্বন উৎপাদনই বাড়াবে না, এটি বাংলাদেশের জ্বালানী নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।”

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মি. মনসুর বলেন, গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তিটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি এবং এর আওতায় তারা এখন শুধুমাত্র নির্ধারিত এই দশটি কূপই খনন করবে। কূপের সম্পূর্ন মালিকানা বাংলাদেশের থাকবে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবী করেন, গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তির ফলে দশটি কূপ খননের গড় ব্যয় এর আগে অন্যান্য বিদেশী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কূপ খননের ব্যয়ের চেয়ে কম হবে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

৫ম বারের মতো বোরোর বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

 

২৯ এপ্রিল ২০১২

কাওসার রহমান ॥ টানা পঞ্চমবারের মতো দেশে বোরোর বাম্পার ফলনের রেকর্ড সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় চলতি বছরও দেশে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এ বাম্পার ফলনের পর কৃষকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ধানের মূল্য নিয়ে। বোরো ধান কাটা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে নতুন ধানের বাজারে ধস নামার। ইতোমধ্যে নতুন ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ধানের দাম আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। ফলে কৃষকের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অথচ সার, বিদ্যুত, ডিজেল ও কৃষি শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ বছর বোরো উৎপাদনের খরচ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় সরকার ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসছে না। বরং বিপুল মজুদ নিয়ে সরকারও এবার বোরো ধান-চাল ক্রয়ের ব্যাপারে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। গত দুই বছর আগে ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য ঘোষণা করা হলেও এবার এখন পর্যন্ত বোরো ধান- চাল সংগ্রহের মূল্য ঘোষণা করা হয়নি। ফলে নতুন ধানের বাজার নৈরাশ্যজনক অবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। এ সুযোগে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়ারা নতুন ধানের বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাই এখন বোরো ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থায় সরকার ধানের বাজারে হস্তক্ষেন না করলে কৃষক ধান আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সারাদেশে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। দেশের হাওড় অঞ্চলে এখন পুরোদমে ধান কাটা চলছে। অন্যান্য অঞ্চলেও আগাম বোরো ধান কাটা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ৩০ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। কৃষক নগদ টাকার জন্য বাজারে নতুন ধান নিয়ে গিয়ে বিপাকে পড়ছে। নতুন ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ধানের বাজারও পড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ভিজা ধান প্রতিমণ ৪৫০ থেকে ৫শ’ টাকায় নেমে এসেছে। হাওড় অঞ্চলে নতুন ভিজা ধানের দাম ৪শ’ টাকায় চলে এসেছে। ফলে কৃষকের মধ্যে দারুণ হাতাশা দেখা দিয়েছে।

এবার নিয়ে টানা পাঁচ বছর দেশে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, বড় ধরনের কোন প্রাকৃতি দুর্যোগ না হওয়ায় এ বছর বোরোর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় ধানের যে ফলন দেখা যাচ্ছে তাতে বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ মণ পর্যন্ত ধানের ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এতে এ বছর বোরোর উৎপাদন এক কোটি ৯০ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। 
জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দক্ষতার কারণে গত পাঁচ বছর ধরেই দেশে বোরোর বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে বোরোর এ বাম্পার ফলন শুরু হয়েছে। ওই বছর চাল আকারে বোরোর উৎপাদন আগের বছরের এক কোটি ৫০ লাখ টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে এক কোটি ৭৭ লাখ ৬২ হাজার টনে দাঁড়ায়। পরের বছর ২০০৮-০৯ সালে বোরো উৎপাদন হয় এক কোটি ৭৮ লাখ নয় হাজার টন। পরবর্তীতে নন-ইউরিয়া সারের মূল্য হ্রাস করার কারণে কৃষক তার জমিতে সুষম সার প্রয়োগের সুযোগ পায়। সেই সঙ্গে অন্যতম কৃষি উপকরণ সার কৃষকের দোরগোড়ায় চলে যাওয়ায় বোরো উৎপাদনে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে ২০০৯-১০ সালে বোরো উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি ৮৩ লাখ ৪১ হাজার টন। পরের বছর ২০১০-১১ সালে বোরো উৎপাদন আরও বেড়ে এক কোটি ৮৭ লাখ টন হয়। ধারাবাহিকভাবে টানা পাঁচ বছর বোরোর এ বাম্পার ফলন দেশে কৃষি খাতের ইতিহাসে একটি অনন্য রেকর্ড, যার কৃতিত্ব এ দেশের কৃষকদের। 
কিন্তু এ বাম্পার ফলন নিয়েও কৃষক খুশি হতে পারছে না। বাজারে ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় নতুন ধান নিয়ে কৃষকের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরিয়া সার, ডিজেল, বিদ্যুত ও কৃষি মজুরের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর বোরো উৎপাদনের খরচ কমপক্ষে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর যেখানে এক কেজি ধান উৎপাদনে খরচ পড়েছে ১৫ টাকা ৪৭ পয়সা, এ বছর সেখানে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ১৩ পয়সা। 
গত বছর নতুন ধান ওঠার পর ধানের দাম যেখানে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকার মধ্যে ছিল। এ বছর তা ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ১৭-১৮ টাকা উৎপাদন খরচের বিপরীতে কৃষক এবার ধানের দাম পাচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা। নগদ টাকার সঙ্কটের কারণে এ দামেই কৃষকরা বাধ্য হচ্ছেন ফড়িয়াদের কাছে ধান বেচতে। 
নতুন ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ধানের দাম কমে যাওয়ায় আশঙ্কা করা হচ্ছে বোরো ধান কাটা পুরোদমে শুরু হলে এ দাম আরও কমে যাবে। ফলে কৃষক তার ধান নিয়ে বিপাকে পড়বে। বিশেষ করে সবচেয়ে বিপদে পড়বে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা। কারণ নগদ টাকার সঙ্কটের কারণে তাদেরই নতুন ধান নিয়ে এখন বাজারে দৌড়াতে হচ্ছে। 
নতুন ধানের বাজারে এ নৈরাশ্যজনক অবস্থার সৃষ্টি হলেও সরকার এখন পর্যন্ত ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য ঘোষণা করেনি। বিপুল পরিমাণ মজুদের কারণে সরকার এবার ধান-চাল সংগ্রহে ধীরগতিতে এগুচ্ছে, যা বাজারে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে সরকারের কাছে প্রায় ১৩ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। এর মধ্যে ১১ লাখ টনই চাল। এ মজুদ নিয়ে সরকার এবার কতটা ধান-চাল কিনতে পারবে সেটা নিয়েও সরকার চিন্তায় আছে। কারণ সরকারী খাদ্য গুদামগুলোর ধারণক্ষমতা ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন। 
এ অবস্থায় খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক একটি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, এ বছর দেশে প্রায় দুই কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দশ লাখ টন চাল কিনে কতটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। কৃষক এবার বোরো ধানের ভাল দাম পাবে কিনা এ নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন। কারণ সরকার চাইলেও বোরো ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তবে এ বিষয়ে সরকার কি করতে পারে তা নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হবে। 
তিনি বলেন, ‘সরকার ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতোমধ্যে দেশে চাল আমদানি বন্ধের চিন্তাভাবনা করছে। সেই সঙ্গে সরু চাল রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে

NewImage

সুত্র

ড. আহমদ আল-কবির
বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা ‘মিরাকল’ (গরৎধপষব)। উন্নয়নের সূচকগুলো বিবেচনায় নিলে বিশেষ করে আর্থসামাজিক অবস্থার বিচার-বিশ্লেষণ করলে এমন প্রতীতি জন্মাবে যে বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ। সাধারণভাবে পাঠ্যবইয়ে অর্থনীতির যেসব তাত্তি্বক বিষয় পড়ানো হয়, তা বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি ও প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মেলানো কঠিন। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘দারিদ্র্য বিমোচনকে’ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির লড়াই চালিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশের বর্তমান দরিদ্রের হার ২৮ শতাংশ যা ২০০৬ সালে (গত বিএনপি সরকারের শেষ বছর) ছিল ৪০ শতাংশের উপরে। কৃষি, শিক্ষা, মা ও শিশুমৃত্যু, তথ্যপ্রযুক্তি ও বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ অন্যান্য সামাজিক খাতে যুগান্তকারী উন্নয়নের পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও মাথাপিছু আয়সহ অর্থনীতির অনেক সূচকে ব্যাপক উন্নতি আমাদের প্রবৃদ্ধিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। গত তিন বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে ৬ শতাংশেরও অধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে ও ২০১১-১২ সালে ৬.৭ শতাংশ অতিক্রম করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এ হার গড়ে ৩.২ শতাংশ এবং ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত গড়ে ৪.৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হচ্ছিল। বাংলাদেশের এউচ প্রবৃদ্ধির হার পাকিস্তান, নেপালসহ এ২০-এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো (আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান ইত্যাদি) থেকে ও ২০১১ সালে ভালো অবস্থানে (২৪তম) আছে। 
২০১৫ সালের মধ্যে সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যে ১৬টি দেশ সাফল্য দেখাতে পেরেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, নারী উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা ও কৃষি উন্নয়ন বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে বলে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে স্পষ্ট করেই বলেছেন। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে উত্তরোত্তর সাফল্য অনেক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞের কাছে আদর্শ হিসেবে কাজ করছে। জাতিসংঘের ৬৬টি শান্তি মিশনের মধ্যে ৪৫টি মিশনেই বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে এবং দুটি মহিলা শান্তিরক্ষী দল পাঠাতে সক্ষম হয়। বিশ্ব ফোরামে বাংলাদেশের সাফল্যের মধ্যে ২০১০ সালের গউএ অধিৎফ-৪, ২০১১ সালে ঝড়ঁঃয ঝড়ঁঃয ঘবংি অধিৎফ, এবং ২০১০ সালে বাংলাদেশের দুটি ঘএঙ কর্তৃক ঊহবৎমু ওহহড়াধঃরড়হ অধিৎফ লাভ করা অন্যতম। এছাড়াও বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ঈষরসধঃব ঈযধহমব, ঞবৎৎড়ৎরংড়স ও ঠরড়ষবধহপব-সহ সব আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
২০০৭-০৯ সালব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বিশ্ব অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ালেও ২০১১ সালে আবারও একটি বড় ধাক্কা ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়া মহাদেশ এ ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে হচ্ছে। মন্দা থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে উন্নত ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো বিপুল বাজেট ঘাটতি, উচ্চ সরকারি ঋণ (ঢ়ঁনষরপ ফবনঃ) মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের হার বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দেশের সার্বভৌম ঋণ (ংড়াবৎবরমহ ফবনঃ) সমস্যা প্রবৃদ্ধির গতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি উন্নত দেশের চলতি হিসাবে বিশাল আকারের ঘাটতি এবং জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশ ও কয়েকটি বিকাশমান অর্থনীতির চলতি হিসাবে বিশাল আকারে উদ্বৃত্ত বিশ্ব অর্থনীতিকে ভারসাম্যহীন করে তুলেছে। এ ভারসাম্যহীনতা কমিয়ে আনার ব্যর্থতা বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে অনেকটা নাজুক করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক পরিম-লে নীতি নির্ধারণে সমন্বয়ের অভাবও বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থাপনার সংস্কার কার্যক্রমকে বিলম্বিত করছে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার শুরুতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর এর বিরূপ প্রভাব না পড়লেও ২০০৮-০৯ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক থেকে রপ্তানি ও আমদানি খাতে কিছুটা প্রভাব পড়ে যা ২০০৯-১০ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। মন্দা-পরবর্তী বিশ্ব বাণিজ্যের গতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেরও বৈদেশিক বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় এবং ২০১০-১১ অর্থবছরের রপ্তানি ও আমদানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২৩ বিলিয়ন ও ৩২ বিলিয়ন ডলার (যা ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ছিল যথাক্রমে ১০.৫ বিলিয়ন ও ১৪.৭ বিলিয়ন ডলার)। ২০১১ সালের শেষ ছয় মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় আবারও বাংলাদেশে চাপ অনুভূত হচ্ছে এবং এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি ও সরকারি ঋণের বৃদ্ধি ঘটছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বিশ্বমন্দার সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে যথাযথ আগাম ধারণা অর্জন এবং সে পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক উদ্যোগ ও মুদ্রা ব্যবস্থাপনার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের মতো নানাবিধ সহায়তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে মন্দার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। মন্দার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে আবাসন শিল্পে ধস নামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশ হতে শ্রমশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধির গতি কিছুটা হ্রাস পায়। তবে এ সময় রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক পর্যায়ে থাকে এবং ২০০৮-০৯ ও ২০০৯-১০ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয় যথাক্রমে ২২.৪২ শতাংশ ও ১৩.৪০ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথমার্ধে জনশক্তি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেলেও জানুয়ারি, ২০১১ সাল থেকে তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং তা ২০১০-১১ অর্থবছরে ১১.৬৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে (২০০৫-০৬ বছরে এর পরিমাণ ছিল ৪.৮৭ বিলিয়ন ডলার)। কর্মসংস্থান বাড়ানো ও বেকারত্ব কমাতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ৪৬তম যা তার পাশের দেশ ভারত (১১১তম), আফগানিস্তান (১৮০তম), পাকিস্তান (১৫২তম) এবং নেপাল (১৯০তম) থেকে অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের পঞ্চম জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা বজায় থাকা ও মন্দা-পরবর্তী বিশ্বব্যাপী পণ্য ও সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে দেশের রপ্তানি ও আমদানি বাণিজ্যে যেমন উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক ও রাজস্ব খাতে গৃহীত ব্যবস্থার পাশাপাশি মুদ্রা খাতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ধানের ভালো উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল থাকায় আগামী মাসগুলোয় বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করা যায়। রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস ও বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১০-১১ অর্থবছরে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত হ্রাস পেয়েছে। এ সময়ে বিনিময় হারের অবনতি ঘটেছে। তা সত্ত্বেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সহনশীল পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। ২০০৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়ন ডলার এবং ২০১১ সালের ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ৯.৫ বিলিয়ন ডলার। জানুয়ারি ২০১১ থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং অবকাঠামো খাতে সরকার যে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছে তার সফল বাস্তবায়ন অর্থনীতিতে অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি করবে যা দেশকে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
উন্নত বিশ্বের তথ্য মাধ্যমে সাধারণত বাংলাদেশ সম্পর্কে ২০০৯ সালের আগে পর্যন্ত নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশিত হতো। এ খবরগুলো সুখকর ছিল না। বন্যা, খরা, অপুষ্টি, খাদ্যস্বল্পতা, আর্থিক সংকট ইত্যাদি বিষয় পশ্চিমা পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিল। অথচ এ দেশের যে গর্ব করার মতো অর্জন হয়েছে সে সম্পর্কে তারা নিশ্চুপ থাকতে পছন্দ করত। বাংলাদেশ মানেই হতাশা ও ব্যর্থতা, এটাই পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে এতদিন প্রতিষ্ঠিত ছিল। বিশ্বমন্দা উত্তরণের সময়ে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্রঋণের সাফল্য, সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা প্রসঙ্গে নজরকাড়া অর্জন, পরিবার পরিকল্পনা, শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে বৈপ্লবিক উন্নতি, শিক্ষা বিশেষ করে নারীশিক্ষায় ব্যাপক অগ্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে সংবাদ প্রায়ই বেরোচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ২০০৬ সালে ৪৮৭ ডলার থেকে ২০১১ সালে ৮১৮ ডলারে পেঁৗছেছে_ তা বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে উন্নত করার লক্ষ্যে বড় অর্জন বলে আমরা মনে করি।
এ পরিস্থিতিতে আমাদের কতিপয় মহলের চিন্তা ও প্রচারণা খুবই নেতিবাচক। বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক নেতা, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী দেশটাকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র প্রমাণের জন্য উঠেপড়ে লেগে গেছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচক ঋণাত্মক, এর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় নিঃশেষ হয়ে আসছে, পুঁজিবাজারের অচলাবস্থা শেষ হবে না, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলোর কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উত্তরোত্তর সংকটের মধ্যে পড়েছে, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দুষ্প্রাপ্যতার কারণে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ থমকে আছে, সর্বোপরি সর্বত্র সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে এবং মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, এ মর্মে প্রচুর বক্তব্য আমরা দেখি ও শুনি। 
আমি এসব সম্মানিত বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক-পেশাজীবী (আমাদের দেশে রাজনীতিকেও অনেকে একটি অর্থকরী পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন) ও টক শো আয়োজকদের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। মোটা দাগে বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কখনো ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি এ দেশে দেখা যায়নি। স্বাধীনতার আগে ও পরে এদেশে মাত্র কয়েক বছর অর্থনীতির অবস্থা খারাপ ছিল এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের অর্থনীতি নাজুক থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। স্বাধীনতার পরপর এদেশে মাত্র কয়েকশ কোটি টাকার বাজেট ছিল। এখন তা লাখো কোটি অতিক্রম করেছে। এটা যে কোন মাপকাঠিতে খুব বড় একটি অর্জন এবং এটা নিয়ে বিজয়ের ৪০ বছরপূর্তিতে আমরা গর্ব করতে পারি।
বৈশ্বিক মন্দার অভিঘাত মোকাবিলায় যথেষ্ট দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬.৬৬ শতাংশে। কৃষি খাতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার পাশাপাশি শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়ানো এবং সেবা খাতের সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি সার্বিকভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। এ সময়ে রাজস্ব আহরণের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সুষ্ঠু বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজস্ব আহরণের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সুষ্ঠু বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাজস্ব খাতে শৃঙ্খলাও বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বিশ্বের যে কোন উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঈর্ষার বিষয়। মোট জাতীয় উপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ২০১১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ২৪তম ছিল (২০১০ সালে বাংলাদেশের এ অবস্থান ছিল ৫৫তম), এর অর্থ হলো বিশ্বে এখন ১৯১টি স্বাধীন দেশ রয়েছে, যাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হারের চেয়ে কম। বিগত ৩ বছরে বাংলাদেশ গড়ে ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। এ বছর তা ৬.৭ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা যায়। তারপরও কি আমরা বলব বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র?
আমদানি ও রপ্তানি খাতে ২০১০-১১ অর্থবছরে ব্যাপক বৃদ্ধি অনেক বিশ্লেষককে আশ্চর্যান্বিত করেছে। এ দুই ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির বিচারে বাংলাদেশের অবস্থান এশিয়ার শীর্ষ তিনের মধ্যে। পরিসংখ্যান দেখলে তা সহজেই বোঝা যায়। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা প্রথম। রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা নতুন বাজারে প্রবেশ করছি। রপ্তানিতে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের গার্মেন্টস খাতের সঙ্গে রেমিট্যান্স ও ওষুধ খাত প্রতিযোগিতা করবে। এছাড়া মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে পারলে সে খাতটিরও ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে দক্ষ মানবসম্পদ রপ্তানির বড় সুযোগ রয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে বাজার ধরতে পারলে রেমিট্যান্স কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।
খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি মূল্য বিশ্বের সর্বত্রই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এটি হ্রাস পাবে এমন সম্ভাবনা কম। সম্মানিত বৃদ্ধিজীবীদের আলোচনা শুনলে মনে হয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যর্থতার জন্যই দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের অবগতির জন্য বলছি যে, বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় একই রকম। স্বাধীনতার পর থেকে ধীরে ধীরে দরিদ্রের হার কমছে এবং এ বছর তা ৩১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ে বাজার বিশ্লেষক ও রাজনীতিকরা তাদের নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী পুঁজিবাজারের ২০১১ সালের নিম্নমুখী প্রবণতা বিশ্লেষণ করলেও বর্তমানে সঠিক অবস্থা অনেকটা পরিষ্কার। আমি মনে করি পুঁজিবাজারে উত্থান ও পতন একটি স্বাভাবিক ব্যাপার এবং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক সরবরাহ বিবেচনায় নিয়ে ২০১০ সালে শেষের দিকে সূচকে ব্যাপক উত্থান ছিল অস্বাভাবিক। এ সময়ে এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী তাদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে বাজার থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১ হাজার ৪৯১ জন পরিচালকের শতকরা দুই ভাগের কম শেয়ার তাদের নিজ কোম্পানিতে আছে। এছাড়াও ৩৮টি কোম্পানির স্পন্সর ও পরিচালকদের শতকরা ৩০ ভাগের কম শেয়ার তাদের মালিকানায় আছে। এসব কোম্পানি ও পরিচালকরাই তাদের শেয়ার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করেছিলেন এবং তারা (ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী) তাদের মূলধন হারিয়েছেন। সরকার এ ধরনের অব্যবস্থা রোধে ডি-মিউচুয়েলাইজেশন করার উদ্যোগসহ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট গ্রহণ করে এসইসিকে পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে এসব ব্যবস্থার বাস্তবায়নকে সবাই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। পুুঁজিবাজারকে তার নিজস্ব গতিতে স্বাধীনভাবে চলতে দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে তাদের নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ ও দীর্ঘমেয়াদি নির্দেশনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
দেশে মুদ্রাস্ফীতি, মুদ্রা সরবরাহ পরিস্থিতি, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে অধুনা অনেক নেতিবাচক কথাবার্তা হচ্ছে। এ সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বগামী থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ আমাদের গার্মেন্টস খাতের সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে এসেছে ওষুধ শিল্প, চামড়া, পাদুকা শিল্প, সফটওয়্যার সামগ্রী ও প্রসাধনী শিল্প। এছাড়া মানবসম্পদের উন্নয়ন করে বিদেশের শ্রমবাজারে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মানবসম্পদ রপ্তানির মাধ্যমে শ্রমবাজারগুলো ধরে রাখতে পারলে রেমিট্যান্স আরও বহুগুণ বৃদ্ধি করা যাবে যা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট অবস্থানে ইতিবাচক প্রতিঘাত ফেলবে। বর্তমান সরকারের রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী সবার কর্মসংস্থানের জন্য যুবসমাজকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে প্রশিক্ষণ প্রদানে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতে হবে। এ সুযোগ তৈরি করার জন্য সরকারকে সহায়ক হিসেবে কাজ করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সুস্পষ্ট নীতিমালা ও লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে হবে। বর্তমান সরকারের ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়াই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একমাত্র রক্ষাকবচ। তাই সব অর্থনৈতিক কর্মকা-ে (যথা ট্যাক্স ও রেভিনিউ সংগ্রহ, ক্রয়-বিক্রয় প্রক্রিয়া, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি) বর্তমান সরকারের ঘোষিত ব্যবস্থাগুলো কৃতিত্বের দাবিদার।
পাশাপাশি তরুণ পেশাজীবীদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি। তরুণ পেশাজীবীদের আমি সম্মান করি। উন্নতির জন্য দুটি বিষয় খুবই জরুরি। একটা হলো মানবসম্পদ উন্নয়ন, অন্যটি তরুণ পেশাজীবীদের গুরুত্ব প্রদান। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ লোকের বয়স ৪০ বছরের নিচে আর ৩৪ শতাংশ ১৪ বছরের নিচে। এ দুটি অবস্থা থেকে বোঝা যায়, তরুণদের কথার বা মতামতের প্রতিফলন যদি না করা হয়, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন অথবা রাজনৈতিক উন্নয়ন কোনটিই অর্জন করা সম্ভব নয়।
স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, কিছু প্রতিবন্ধকতার জন্য আমাদের অর্থনীতি পূর্ণমাত্রায় গতিশীল হতে পারছে না। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন। পর্যাপ্ত গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য। উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলাও জরুরি। আমাদের অর্থনীতির গতিশীলতা আরেকটি প্রতিবন্ধকতা হলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। 
আমলাতন্ত্রের দক্ষতার অভাবে প্রচুর অর্থব্যয় সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আশানুরূপভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে না। এমনকি বৈদেশিক সহায়তা যথাযথ ব্যবহারের অপারগতায় বিভিন্ন প্রকল্পের অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি ও অনেক অর্থ অব্যবহৃত থেকে ফেরত যাচ্ছে। এসব প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াও সবসময় আমাদের অর্থনীতিকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের খামখেয়ালিপনা, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও অস্থিরতা, বিশ্ববাজারে তেল ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি আমাদের অর্থনীতির ভিত নাড়িয়ে দেয়।
জাতি গঠনে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই তাদের যুক্তিনির্ভর, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ হওয়া জরুরি। সত্য গোপন করে বা আংশিক গোপন করে পূর্বাপর সূত্রহীন কোন তথ্য সাময়িক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করতে পারে, তবে এ থেকে দীর্ঘদিন ধরে কোন ফায়দা নেয়া যায় না। যদি তারা পক্ষপাতদুষ্ট হন এবং মহল বিশেষের ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধির প্রতিভূ হিসেবে কাজ করেন তবে শেষ পর্যন্ত তারা জনসাধারণের আস্থা ও সমর্থন হারাবেন। দেশে মতপ্রকাশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, তবে আমার মতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যুক্তিতর্কের ও উপাত্তের সাহায্যে মতামত প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেয়া উচিত অন্যথায় আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হব।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

Hitting the Beach in Bangladesh

COX’S BAZAR, Bangladesh — It’s not Hawaii, and it’s not St.-Tropez. But Cox’s Bazar is an up-and-coming beach resort, with lush vegetation and soaring property prices to match.

Located in southeastern Bangladesh, Cox’s Bazar is miles away — physically and metaphorically — from the long-developed beaches of Thailand or Vietnam. There is no alcohol — at least, none is openly served — and bathers splash about while fully dressed.

Most bathers at Cox's Bazar in Bangladesh are fully clothed.G.M.B. Akash for the International Herald TribuneMost bathers at Cox’s Bazar in Bangladesh are fully clothed.

But a visit here brings home the fact that Bangladesh, much like its flashier neighbors, is enjoying rapid economic growth. And even though millions of Bangladeshis live in abject poverty, many others have the cash to pay for some beachside relaxation.

Most visitors to Cox’s Bazar are Bangladeshis: The country sees few foreign tourists, and business travelers mostly journey only to Dhaka, or perhaps the port city of Chittagong. Still, a visit here also shows that Bangladesh is slowly appearing on the radar screen of international investors.

To be sure, for investors to really come flocking, Bangladesh will need to get its act together on a lot of things — power cuts and traffic gridlock, for example, along with the immigration queue at the airport, which is the slowest I have ever experienced.

Still, as I report in more detail in this article, some analysts now flag Bangladesh’s potential as the “next China,” or at least the “next Indonesia.”

“The country is doing more than just keeping its head above water in terms of growth,” said Herald van der Linde, an equities analyst at HSBC in Hong Kong, who, like me, thought the country deserved a closer look, and visited recently. “Bangladesh is an open, dynamic market, with plenty of room to grow.”

Hotel companies clearly agree.

Carlson Rezidor Hotel Group opened a Radisson in Dhaka in 2006. It is planning to open two more in Cox’s Bazar and another in Chittagong. Starwood, which already operates a Westin in Dhaka, is planning to add a Sheraton and a Le Méridien.

Accor of France is exploring several options for its entry into Bangladesh, including properties in Dhaka and in Chittagong.

In the town of Cox’s Bazar, the flow of Bangladeshi tourists has brought untold riches and job opportunities, and seems to have made many people happy — for the moment.

However, there also are controversies over land allotments, as reported last month in The Daily Star. And concerns about the environmental impact of development were reported in the Daily Sun earlier this month.

source

 

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

NYtimes: In an Unlikely Corner of Asia, Strong Promise of Growth

In an Unlikely Corner of Asia, Strong Promise of Growth

G.M.B Akash for the International Herald Tribune

Bangladeshis go to Cox’s Bazar for a weekend of well-behaved, fully clad fun by the seaside.

 

COX’S BAZAR, Bangladesh — Bangladesh is probably one of the last places in Asia people would expect to see a thriving beachside resort with luxury hotels.

G.M.B Akash for the International Herald Tribune

A construction site for Green Delta Housing Ltd. About five years ago, there were only two or three high-end hotels in the area. Now there are a dozen, and counting.

G.M.B Akash for the International Herald Tribune

The transformation of Cox’s Bazar from remote backwater to beach El Dorado — Bangladesh-style — encapsulates the changes that have taken place in this nation, and many other developing Asian countries, over the past decade or two.

G.M.B Akash for The International Herald Tribune

A clothing store in Dhaka, the capital of Bangladesh. The garment industry employs 3.6 million people in the country.

And yet, Cox’s Bazar is exactly that — a place where affluent Bangladeshis go for a weekend of seaside fun. During the high season, when the monsoon rains are not pounding the country, the beach is filled with children and their watchful parents among slightly dilapidated orange beach umbrellas.

About five years ago, only a few luxury hotels were in this small city on the Bay of Bengal. Now there are a dozen, and counting. Smaller hotels and guesthouses are proliferating, and property prices have risen sharply.

The transformation of Cox’s Bazar from remote backwater to a beach El Dorado encapsulates the changes that have taken place in this country of 160 million people, and many other developing Asian countries, over the last couple of decades.

“A middle class is gradually forming,” said Zahid Hossain, principal economist at the Asian Development Bank in Dhaka, the capital of Bangladesh. The growth in the country mirrors the developments in other emerging economies, he said. “Domestic demand is growing and becoming an important driver of economic activity.”

The progress, though, has been uneven. As in other Asian countries, the gap between rich and poor has widened in Bangladesh, giving rise to social tensions and sometimes violent protests. The murder this month of Aminul Islam, a prominent labor rights activist, apparently in retaliation for his advocacy work, put a spotlight on the low wages and poor working conditions that prevail in burgeoning sectors like the garment industry.

In Bangladesh’s countryside, home to more than 70 percent of the population, subsistence farming remains the norm, and weather-related disasters regularly wreak havoc in the flat lowlands.

Foreign direct investment in Bangladesh has languished at about $1 billion a year — less than what Albania or Belarus each receive, and about one-tenth of foreign investments in Thailand or Malaysia. Inadequate power and transportation infrastructures, political infighting, bureaucracy, corruption and a shortage of skilled laborers contribute to a challenging investment climate.

Yet despite this, the Bangladeshi economy has managed to grow more than 6 percent a year for much of the last decade.

Economists at Standard Chartered Bank believe that Bangladesh could join what have been called the “7 percent club” of economies that expand at least 7 percent annually for an extended period — allowing their economies to double every decade. Current members of the “club” include China, Cambodia, India, Mozambique and Uganda.

HSBC included Bangladesh in a group of 26 economies — along with China, India and several Latin American and African countries — where it expects particularly strong growth. The United States and much of Europe, by contrast, are likely to remain merely stable, according to HSBC’s projections.

The gradual shift in global production to low-cost countries, from developed economies in Europe and North America, is driving much of that growth. The trend, which began turning parts of Asia — notably China — into manufacturing hubs in the 1980s and 1990s, has started to take root in Bangladesh.

For now, Bangladesh’s manufacturing prowess is primarily focused on the garment sector, which has grown into a multibillion-dollar industry that employs 3.6 million people and accounts for 78 percent of the country’s exports.

Bangladesh has seen particularly strong growth in the last few years, partly because of rising labor costs in China, where manufacturing is moving into higher-margin activities like product design.

“For many years, China was almost always the hands-down answer to all buyers’ needs,” the consulting firm McKinsey noted in a recent report. Now, Western wholesale buyers of garments are looking for the “next China,” and Bangladesh “is clearly the preferred next stop for the sourcing caravan.”

Bangladesh exported nearly $18 billion worth of garments in the 12 months through June 2011, $10.5 billion of that to the European Union and $4.6 billion to the United States, according to the Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association. The total nearly doubled from four years earlier, and McKinsey forecast that the garment industry would grow by as much as 9 percent a year over the next decade.

Li & Fung, a giant Hong Kong trading company that supplies retailers including Walmart with clothing mostly purchased from Asia, is a case in point. Last year, the company bought $1 billion worth of apparel from manufacturers in Bangladesh, 41 percent more than in 2010. Bangladesh overtook Vietnam and Indonesia in 2011 to become the second-largest source of such products for Li & Fung, after China.

But infrastructure bottlenecks and power cuts are substantial “negatives,” Bruce Rockowitz, chief executive of Li & Fung, said at a recent news conference in Hong Kong. Still, the company intends to increase the business it does in Bangladesh. “The prognosis,” Mr. Rockowitz said, “is good.”

Another driver of economic growth has been the inflow of remittances — money sent home by Bangladeshis who have sought employment abroad. More than $11 billion worth of remittances flowed into Bangladesh last year, more than 10 times the amount from foreign investment, and the annual inflow is expected to rise to $20 billion in five years’ time, the government estimates.

Of course, the fact that tens of thousands of Bangladeshis go abroad each year highlights a weakness in the country’s economy: well-paid jobs are hard to come by.

Manufacturing is mostly confined to low-level, fairly unskilled assembly work, rather than to high-end production or design. Moreover, “other sectors, such as shipbuilding and pharmaceuticals, are only just starting to emerge,” said Agost Benard, who covers Bangladesh for the ratings agency Standard & Poor’s.

Still, the expansion of the past few years and improvements in the agriculture sector mean that domestic demand is growing.

Dhaka, whose population has ballooned to about 15 million, now has car showrooms and a small but growing number of high-end international hotels. Monthly office rents in the most sought-after neighborhoods of the capital can be as high as 250 taka per square foot, or about $3 — levels that would not look out of place in some Western cities, according to the real estate services firm Jones Lang LaSalle.

In Cox’s Bazar, construction sites pockmark the once laid-back beachfront. A Best Western hotel is in the making. Green Delta Housing, a Bangladeshi construction company, is working on several developments. Carlson Rezidor Hotel Group, which already operates a Radisson in Dhaka, is planning to open two hotels in Cox’s Bazar in 2015.

The town is a long way from turning into Cancún, Mexico, or the Côte d’Azur in France. Rickshaws trundle along the potholed road between the small airport and the hotel zone farther south, where shopkeepers sell dried fish and sunglasses, and rickety stalls on the beach sell souvenirs crafted from seashells.

“This is not ‘Baywatch’ or Hawaii,” said Mikey Leung, a co-author of the Bradt travel guide to Bangladesh. “You’re not talking international-style resorts.”

But Cox’s Bazar has changed a great deal over the past five years, Mr. Leung said. “Properties are popping up like daisies, and the development is moving further and further down along the beach. The speed and scale of it is unprecedented for Bangladesh.”

Moniruzzaman, a marketing executive at the Cox’s Bazar office of Green Delta Housing who uses only one name, concurred.

“Many, many things are happening,” he said. “Land is like gold now.”

 

NewImage

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

বিনিয়োগ বাড়ছে স্বাস্থ্যসেবা খাতে

দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে গত চার দশকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বহুগুণ বেড়েছে। ইতিমধ্যে দেশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল। এসব হাসপাতালে রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও আধুনিক যন্ত্রপাতি। তবে এর বেশির ভাগই বেসরকারি উদ্যোগে হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, স্বাস্থ্যসেবা খাতে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে হেলথ ট্যুরিজমের সুযোগ। আরো উন্নত মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ অনেক বিদেশি রোগী আসবে। ১৬ কোটি মানুষের বিশাল জনগোষ্ঠীর কারণে এ খাত থেকে ভালো আয়ের সুযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি দেশের দুটি হাসপাতালে বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাজ্যের জেনারেল ইলেকট্রিকের স্বাস্থ্যবিষয়ক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জিই হেলথ কেয়ার। বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগ করে আসছে এ প্রতিষ্ঠানটি। জিই হেলথকেয়ার, ইউনাইটেড হাসপাতাল ও মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস বাংলাদেশে প্রথম দুটি মলিকুলার ইমেজিং সেন্টার চালু করেছে।
জিই হেলথকেয়ারের কারিগরি যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতাল ও মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেস। এতে পিইটি বা সিটি ইমেজিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রটি ক্যান্সার নির্ণয়ে ব্যবহৃত আইসোটোপ, ট্রেসার উৎপাদনের জন্য দেশের প্রথম মেডিক্যাল সাইকোলট্রন স্থাপন করছে। মেডিক্যাল সাইকোলট্রন স্থাপনের জন্য জিই হেলথকেয়ার ও ইউনাইটেড হাসপাতাল যৌথভাবে এ খাতে বিনিয়োগ করেছে ২৫ লাখ ইউএস ডলার। মলিকুলার ইমেজিং সেন্টার ও সাইকোলট্রন প্রযুক্তি স্থাপনের কারণে দ্রুত ক্যান্সার নির্ণয় ও নিরাময় প্রক্রিয়া সহজ হবে বলে দাবি করছেন হাসপাতাল দুটির কর্মকর্তারা।
জিই হেলথ কেয়ারের প্রধান টম জেন্টলির কাছে বাংলাদেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা প্রযুুক্তির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা এবং এর সম্ভাবনার বিষয়ে তিনি খুবই আশাবাদী। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিনিয়োগে যথেষ্ট আন্তরিক। পাশাপাশি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমেও এ খাতের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী।
টম বলেন, ঢাকায় বেশ কিছু ক্ষেত্রেই বিশ্বমানের প্রযুক্তি ও সেবা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা ইউনাইটেড হাসপাতালে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের প্রযুক্তি ও সেবাগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। তাদের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি বিশেষত সাইক্লোট্রন এবং পিইটি সিটি স্ক্যানার রয়েছে, যা ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের সাইক্লোট্রনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে। অন্যদিকে, মেডিনোভা হেলথ সার্ভিসেস তাদের রেডিও ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনাইটেড হসপিটাল থেকে সংগ্রহ করছে। তারা একটি পিইটি সিটি স্ক্যানার প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগও করেছে। উভয় প্রতিষ্ঠানে বিশ্বমানের প্রযুক্তি রয়েছে এবং আমরা তাদের অংশীদার হিসেবে গর্বিত।
জিইর সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট টেরি বেরেনহাম বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে যথেষ্ট বিনিয়োগের সুয়োগ রয়েছে। এখানে সরকারি-বেসরকারি সবাই বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসছে। এখানকার বাজার এত বড় যে বর্তমান বিনিয়োগ ধারা এখনো পর্যাপ্ত নয়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক ক্যান্সার রোগী রয়েছে। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুযোগ নেই। সরকার ইতিমধ্যে পাবলিক-প্রাইভেট পাটনারশিপের ঘোষণা দিয়েছে। এ কারণে এই খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা এখনো বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবা খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেখতে পাচ্ছি।
টেরী আরো বলেন, বাংলাদেশে হেলথ ট্যুরিজমেরও সুযোগ রয়েছে। এ খাতের উপযুক্ত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ অনেক বিদেশি রোগীকে আকর্ষণ করতে পারবে। যদিও বর্তমানে এ সুযোগ ও বাজার খুবই সীমিত।
ইউনাইটেড হসপিটালের পরিচালক ক্লিনিক্যাল অপারেশান ডা. দবির উদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে বিশ্বমানের বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে ওঠায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ রোগী এখন আর বিদেশ যেতে চান না। দেশের হাসপাতালগুলোয় রয়েছে বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল সম্প্রতি স্থাপন করছে বিশ্বমানের ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার, যা দেশি ও বিদেশি চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরিচালিত। এখানে নিউক্লিয়ার মেডিসিনের সহায়তায় প্রাথমিক অবস্থায় সঠিকভাবে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়।
ডা. দবির আরো বলেন, হাজার হাজার বাংলাদেশি ক্যান্সার নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে ভারত, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ক্যান্সার নির্ণয়ে দেরি হয়ে যায়। ফলে শেষ মুহূর্তের চিকিৎসা কোনো কাজে লাগে না। এ ক্ষেত্রে খরচও খুব বেশি হয়। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা এতদিন পর এখন বাংলাদেশে সম্ভব হচ্ছে।
মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ডা. মো. মনোয়ারর হোসাইন বলেন, দেশে চিকিৎসাসেবা খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। সম্প্রতি মেডিনোভা ক্যান্সার রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের জন্য মেডিক্যাল সাইকোলট্রন যন্ত্র স্থাপনে যৌথভাবে বিনিয়োগ করেছে জিই হেলথ কেয়ারের সঙ্গে। তিনি আরো বলেন, দরিদ্র জীবনব্যবস্থা আর পরিবেশগত সমস্যার কারণে বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত্র এবং মৃতের সংখ্যা রেকর্ড স্থাপন করেছে। বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা গেছে, সারা দেশে ১০ লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত। দুই লাখ মানুষ প্রতিবছর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে মহিলাদের বেশি পরিমাণে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা। প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
সম্প্রতি দেশের যেসব বেসরকারি হাসপাতাল উন্নত চিকিৎসাসেবা দিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে এ্যাপোলো হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, ল্যাব-এইড হাসপাতাল ও জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। রাজধানী-কেন্দ্রিক এসব হাসপাতালের মতো বিভাগীয় শহরেও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যসেবা খাত-সংশ্লিষ্টরা।

 

http://www.kalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=Internet&pub_no=867&cat_id=1&menu_id=90&news_type_id=1&index=0

 

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণে ২২৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার

দেশীয় অর্থায়নে ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২৯৭১টি বাসস্থান নির্মাণ করছে সরকার। সারাদেশের ৪৮৪টি উপজেলায় এসব ভবন নির্মাণ করা হবে। ২২৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা প্রাক্বলন ব্যয়ের প্রকল্পটি আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।এটি বাস্তবায়ন হলে আর্থ-সামাজিকভাবে চরম সংকটাপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা যাবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সবাইকে স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ’ নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে তিন বছর। যা চলতি বছরে শুরু হয়ে ২০১৫ সালের জুন মাসে শেষ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। একনেকে অনুমোদন পেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।তথ্যানুসারে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্মুন্নত রেখে আর্থ-সামাজিকভাবে চরম সংকটাপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে দেশের ৬৪ জেলার ৪৮৪টি উপজেলায় ওই ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। যার প্রতিটির আয়তন হবে ৫০০ বর্গফুট। এ ছাড়া প্রকল্পের মধ্যে রয়েছেÑ এক হাজার জন মুক্তিযোদ্ধাকে আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ দেয়ার কর্মসূচি। প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী অংশে সমাজের অনগ্রসর ও অবহেলিত মানুষের জন্য আবাসিক সুবিধা সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। তাই এ প্রকল্পটি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার নীতি ও কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশের ওপর কোন বিরূপ প্রভাব পড়বে না বলেও উল্লেখ করা হয়।জানা গেছে, প্রকল্পটি প্রণয়নপূর্বক অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে গত বছরের ৭ ডিসেম্বরে এটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন (পিইপি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রকল্পটির আওতায় ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ হাজার ৯৭১টি বাসভবন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া এক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বাসস্থান নির্মাণের মাধ্যমে অনগ্রসর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সমস্যা দূর হবে এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। তাই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। সূত্র জানায়, এটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৯১ কোটি ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭৮ কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মূল কার্যক্রম ও পটভূমি সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হওয়া সত্ত্বেও অনেক মুক্তিযোদ্ধার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। এ ছাড়া অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে জরাজীর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কোন রকমে বসবাস করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাদের অনেক দুর্ভোগ উপেক্ষা করে কোন রকমে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এমনকি অনেকের পানীয় জলের সুব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত স্যানিটেশনেরও ব্যবস্থা নেই। তাদের এ করুণ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যেই এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে।ৃ

সুত্র

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান »