
আয়োজক হিসেবে সফল বাংলাদেশ
রবিবার, ২৭ মার্চ ২০১১, ১৩ চৈত্র ১৪১৭
মিথুন আশরাফ ॥ যে দেশেই বড় কোন আসর আয়োজন হোক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব থাকেই। সেই আয়োজনে যদি নিজ দেশ খেলে তাহলে কথাই নেই। এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিশ্বকাপ হলো। আর সেখানে অপ্রাপ্তি শুরুতে দেখা দিল। আর শেষে গিয়ে শুধু প্রাপ্তিই জুটল।
আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রাপ্তিতে ভরে উঠল। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অপ্রাপ্তির ছায়া যুক্ত করেছিল। তিনটি ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আর তিনটি ম্যাচে হারল, সেই সঙ্গে ৫৮ ও ৭৮ রানের লজ্জা সবাইকে হতাশায় ডুবিয়েছিল। রানরেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলা গেল না। তাই নক আউট পর্বে ওঠাও হলো না। অপ্রাপ্তি সবার মধ্যেই কাজ করেছিল। সেই অপ্রাপ্তি অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ করে দিয়েছিল। যখন দৰিণ আফ্রিকার কাছে ১১২ রানে অলআউট হয়েছিল। তখন সবার মনেই গাইল বাংলাদেশই এগিয়ে ছিল।
দুই ম্যাচে এক শ’র নিচে অলআউট হওয়া ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশই ভাল করেছে। বড় একটি দল ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। সেই সঙ্গে আয়ারল্যান্ড ও হল্যান্ডকেও হারার স্বাদ দিয়েছে। আর বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ও হল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ক্যারিবীয়রা। কোন বড় দলকে হারাতে পারেনি। দলটি যে অনেকটা ভাগ্য নিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে সেই প্রমাণ মিলেছে দৰিণ আফ্রিকার বিরম্নদ্ধে ম্যাচে। তাই শুরম্নতে অপ্রাপ্তি ধরা পড়লেও ওয়েস্ট ইন্ডিজই সবাইকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে বাংলাদেশই তাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। ৫৮ ও ৭৮ রানে অলআউট হওয়ার অপ্রাপ্তি রয়েছে ঠিক। তবে সেই অপ্রাপ্তি বেশিদিন সবার মনে বাসা বাঁধতে পারেনি।
বাংলাদেশ দল বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। তবে আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ ছিলই। শুক্রবার বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পুরোপুরিই শেষ হয়ে গেল। সেই দিনটিতে সবার উপলব্ধি হয়েছে বাংলাদেশ ভালভাবেই বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। সফল হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কিছুটা অপ্রাপ্তি যুক্ত করেছিল। তবে শেষ পর্যনত্ম প্রাপ্তিই জুটেছে বাংলাদেশের ভাগ্যে।
‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’_ শুক্রবার দৰিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে এই গানটি প্রতিটি মুহূর্তেই বেজেছিল। ২৫ মার্চ ‘কালরাত’ এবং গতকাল শনিবার ২৬ মার্চ ‘স্বাধীনতা দিবস’ ছিল। এই দিবস দু’টিকে স্মরণে রেখেই বাজানো হয়েছিল গানটি। আরও অনেক দেশাত্মবোধক, স্বাধীনতা দিবসের গান বাজানো হয়েছিল। সেই গানগুলোর প্রতিটি সুর মনে গেথেই আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে। ভেঙ্গেছে মিলনমেলাও। প্রথমবারের মতো নির্ধারিত ওভারের বিশ্বকাপ সফলভাবেই আয়োজন করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ এখনও শেষ হয়নি। তবে আতশবাজি দিয়েই আয়োজক বাংলাদেশ তাদের বিশ্বকাপ আয়োজনের সমাপ্তি টেনেছিল। প্রোটিয়াস এবং কিউইদের মধ্যকার ম্যাচ শেষ হতেই আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হলো।
৩৬ দিন আগে ১৯ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরম্ন হয়েছিল। এর দু’দিন আগে ১৭ ফেব্রম্নয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজনের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পেঁৗছে দিয়েছিল। এরপর একেকটি দিন গেছে আর বিশ্বকাপের সমাপ্তি সামনে চলে এসেছে। শুক্রবার ইতিও ঘটল।
শুক্রবার সকালে যখন সবাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছে তখনই সবার মুখে একই কথা, ‘আহ! বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর কবে হবে ঠিক নেই। তবে অনেক কষ্ট লাগছে কেন জানি।’ এমন উপলব্ধির কারণ একটিই, প্রথমবারের মতো নিজ দেশে বিশ্বকাপের সাৰী হওয়া গেল। এরপর আর কবে আবার এই দেশে বিশ্বকাপ হবে তা কেউ জানে না। হয়ত হবে। তবে সেই বিশ্বকাপেরও যে সাৰী হওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই এমন দুঃখও সবার মনে। তবে সন্তুষ্টিও যুক্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাসে পাথর ছোড়ার ঘটনাটি ছাড়া আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনাই ঘটেনি বাংলাদেশে। বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সাফল্যই কুড়াল।
সত্যিই কী তাই? আইসিসি প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ারই বাংলাদেশকে সাফল্যের সনদপত্র দিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ যে বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করেছে তা বলেছেন। আর স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) আহ্বায়ক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল বললেন, ‘আয়োজক হিসেবে সফলই আমরা। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাসের যে ঘটনা ঘটেছে তা আসলে ভুল ছিল। এ ছাড়া আর কোন সমস্যাই দেখা যায়নি। হঁ্যা, জানি এর মধ্যে অনেকেই হতাশ হয়েছে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু এও মনে রাখতে হবে বিশ্বকাপ আয়োজন চাট্টিখানি কথা নয়।’
বিশ্বকাপে সেন্ট্রাল অর্গানাইজিং কমিটির (সিওসি) বাংলাদেশের পৰের আহ্বায়ক মাহবুবুল আনাম টুটুলের মুখের কথাই যেন কেড়ে নিলেন, ‘আমরা সফল। আয়োজন অসাধারণ হয়েছে। তবে এই সাফল্যের কথা আমরা নয়, বলতে পারবে সবাই। আমরা শুধু আয়োজক হিসেবে আয়োজন করেছি। এখন দেখার বিষয় সামনে কতটা সাফল্যের কথা শোনা যায়?’
বাংলাদেশের পৰের টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর আলী আহসান বাবুও বললেন, ‘কতটুকু সফল হতে পেরেছি তা বলবে দেশের মানুষ, আপনারা। তবে আমরা অনেক ভাল করেছি। এই বিশ্বাস আছে। আয়োজক বাংলাদেশ হিসেবে খারাপ করিনি আশা করি।’
বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপে মোট ৮টি ম্যাচ আয়োজন করল। ৬টি গ্রম্নপ পর্বের। আর ২টি কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ। গ্রম্নপ পর্বে বাংলাদেশের ছয়টি ম্যাচই এখানে হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ আসলে শেষ হয়েছে ১৯ মার্চ। সেদিন দৰিণ আফ্রিকার কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল হারতেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ। শুক্রবার তাও শেষ হয়ে গেছে।
অবশ্য দর্শকরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল না থাকলেও সমর্থন দিয়েই গেছে। আয়োজক হিসেবে আরও দু’টি দেশ আছে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই দু’টি দেশে নিজ দল না থাকলে স্টেডিয়ামভর্তি দর্শক কল্পনাই করা যায় না! অথচ বাংলাদেশ দর্শকরা শাকিব বাহিনী না থাকলেও অন্য দলগুলোকে সমর্থন দিয়ে গেছে ঠিকই। শুক্রবার যেমন দৰিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও স্টেডিয়াম ছিল পরিপূর্ণ। দুই দলকেই সমর্থন দিয়েছে দর্শকরা। ক্রিকেট খেলার মজা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করেছে।
কিন্তু দিন শেষে রাত আসতে সেই দর্শকরাই আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারল না। সেই কষ্ট সবাইকে পুড়িয়েছে। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে আয়োজক বাংলাদেশেরও বিশ্বকাপ শেষ হওয়ায় সবার মনেই কষ্ট জড়িয়ে ধরল। মিলনমেলা ভাঙ্গায় সবাই আবেগাপস্নুত হয়ে গেলেন। বিশ্বকাপে বিদায় বাংলাদেশ। এমন সুরও উঠল। সঙ্গে আইসিসিকে ধন্যবাদও দেয়া হলো। তারাই যে বিশ্বকাপ আয়োজন করার সুযোগটি দিল।
আতশবাজি হচ্ছে। সবাই চিৎকার করছে। চিৎকার শেষ হতেই থমকে গেল সব। বাংলাদেশ থেকে বিদায় হলো বিশ্বকাপ। সব যখন নিশ্চুপ তখন যেন প্রতিটি স্থানেই আওয়াজ, ‘আবার আসিব ফিরে।’ সবার আশা, এটিই যেন সত্য হয়। সেই সত্য নিয়ে অপ্রাপ্তি শেষে প্রাপ্তিই জুটল। আয়োজন শেষে সবার ধারণা আয়োজক বাংলাদেশ সফলই হলো।
আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রাপ্তিতে ভরে উঠল। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অপ্রাপ্তির ছায়া যুক্ত করেছিল। তিনটি ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আর তিনটি ম্যাচে হারল, সেই সঙ্গে ৫৮ ও ৭৮ রানের লজ্জা সবাইকে হতাশায় ডুবিয়েছিল। রানরেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলা গেল না। তাই নক আউট পর্বে ওঠাও হলো না। অপ্রাপ্তি সবার মধ্যেই কাজ করেছিল। সেই অপ্রাপ্তি অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ করে দিয়েছিল। যখন দৰিণ আফ্রিকার কাছে ১১২ রানে অলআউট হয়েছিল। তখন সবার মনেই গাইল বাংলাদেশই এগিয়ে ছিল।
দুই ম্যাচে এক শ’র নিচে অলআউট হওয়া ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশই ভাল করেছে। বড় একটি দল ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। সেই সঙ্গে আয়ারল্যান্ড ও হল্যান্ডকেও হারার স্বাদ দিয়েছে। আর বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ও হল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ক্যারিবীয়রা। কোন বড় দলকে হারাতে পারেনি। দলটি যে অনেকটা ভাগ্য নিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে সেই প্রমাণ মিলেছে দৰিণ আফ্রিকার বিরম্নদ্ধে ম্যাচে। তাই শুরম্নতে অপ্রাপ্তি ধরা পড়লেও ওয়েস্ট ইন্ডিজই সবাইকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে বাংলাদেশই তাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। ৫৮ ও ৭৮ রানে অলআউট হওয়ার অপ্রাপ্তি রয়েছে ঠিক। তবে সেই অপ্রাপ্তি বেশিদিন সবার মনে বাসা বাঁধতে পারেনি।
বাংলাদেশ দল বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। তবে আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ ছিলই। শুক্রবার বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পুরোপুরিই শেষ হয়ে গেল। সেই দিনটিতে সবার উপলব্ধি হয়েছে বাংলাদেশ ভালভাবেই বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। সফল হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কিছুটা অপ্রাপ্তি যুক্ত করেছিল। তবে শেষ পর্যনত্ম প্রাপ্তিই জুটেছে বাংলাদেশের ভাগ্যে।
‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’_ শুক্রবার দৰিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে এই গানটি প্রতিটি মুহূর্তেই বেজেছিল। ২৫ মার্চ ‘কালরাত’ এবং গতকাল শনিবার ২৬ মার্চ ‘স্বাধীনতা দিবস’ ছিল। এই দিবস দু’টিকে স্মরণে রেখেই বাজানো হয়েছিল গানটি। আরও অনেক দেশাত্মবোধক, স্বাধীনতা দিবসের গান বাজানো হয়েছিল। সেই গানগুলোর প্রতিটি সুর মনে গেথেই আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে। ভেঙ্গেছে মিলনমেলাও। প্রথমবারের মতো নির্ধারিত ওভারের বিশ্বকাপ সফলভাবেই আয়োজন করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ এখনও শেষ হয়নি। তবে আতশবাজি দিয়েই আয়োজক বাংলাদেশ তাদের বিশ্বকাপ আয়োজনের সমাপ্তি টেনেছিল। প্রোটিয়াস এবং কিউইদের মধ্যকার ম্যাচ শেষ হতেই আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হলো।
৩৬ দিন আগে ১৯ ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরম্ন হয়েছিল। এর দু’দিন আগে ১৭ ফেব্রম্নয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজনের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পেঁৗছে দিয়েছিল। এরপর একেকটি দিন গেছে আর বিশ্বকাপের সমাপ্তি সামনে চলে এসেছে। শুক্রবার ইতিও ঘটল।
শুক্রবার সকালে যখন সবাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছে তখনই সবার মুখে একই কথা, ‘আহ! বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর কবে হবে ঠিক নেই। তবে অনেক কষ্ট লাগছে কেন জানি।’ এমন উপলব্ধির কারণ একটিই, প্রথমবারের মতো নিজ দেশে বিশ্বকাপের সাৰী হওয়া গেল। এরপর আর কবে আবার এই দেশে বিশ্বকাপ হবে তা কেউ জানে না। হয়ত হবে। তবে সেই বিশ্বকাপেরও যে সাৰী হওয়া যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই এমন দুঃখও সবার মনে। তবে সন্তুষ্টিও যুক্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাসে পাথর ছোড়ার ঘটনাটি ছাড়া আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনাই ঘটেনি বাংলাদেশে। বিশ্বকাপ আয়োজন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সাফল্যই কুড়াল।
সত্যিই কী তাই? আইসিসি প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ারই বাংলাদেশকে সাফল্যের সনদপত্র দিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশ যে বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করেছে তা বলেছেন। আর স্থানীয় আয়োজক কমিটির (এলওসি) আহ্বায়ক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল বললেন, ‘আয়োজক হিসেবে সফলই আমরা। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাসের যে ঘটনা ঘটেছে তা আসলে ভুল ছিল। এ ছাড়া আর কোন সমস্যাই দেখা যায়নি। হঁ্যা, জানি এর মধ্যে অনেকেই হতাশ হয়েছে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু এও মনে রাখতে হবে বিশ্বকাপ আয়োজন চাট্টিখানি কথা নয়।’
বিশ্বকাপে সেন্ট্রাল অর্গানাইজিং কমিটির (সিওসি) বাংলাদেশের পৰের আহ্বায়ক মাহবুবুল আনাম টুটুলের মুখের কথাই যেন কেড়ে নিলেন, ‘আমরা সফল। আয়োজন অসাধারণ হয়েছে। তবে এই সাফল্যের কথা আমরা নয়, বলতে পারবে সবাই। আমরা শুধু আয়োজক হিসেবে আয়োজন করেছি। এখন দেখার বিষয় সামনে কতটা সাফল্যের কথা শোনা যায়?’
বাংলাদেশের পৰের টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর আলী আহসান বাবুও বললেন, ‘কতটুকু সফল হতে পেরেছি তা বলবে দেশের মানুষ, আপনারা। তবে আমরা অনেক ভাল করেছি। এই বিশ্বাস আছে। আয়োজক বাংলাদেশ হিসেবে খারাপ করিনি আশা করি।’
বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপে মোট ৮টি ম্যাচ আয়োজন করল। ৬টি গ্রম্নপ পর্বের। আর ২টি কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচ। গ্রম্নপ পর্বে বাংলাদেশের ছয়টি ম্যাচই এখানে হয়েছে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ আসলে শেষ হয়েছে ১৯ মার্চ। সেদিন দৰিণ আফ্রিকার কাছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল হারতেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল আয়োজক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ। শুক্রবার তাও শেষ হয়ে গেছে।
অবশ্য দর্শকরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল না থাকলেও সমর্থন দিয়েই গেছে। আয়োজক হিসেবে আরও দু’টি দেশ আছে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা। কিন্তু সেই দু’টি দেশে নিজ দল না থাকলে স্টেডিয়ামভর্তি দর্শক কল্পনাই করা যায় না! অথচ বাংলাদেশ দর্শকরা শাকিব বাহিনী না থাকলেও অন্য দলগুলোকে সমর্থন দিয়ে গেছে ঠিকই। শুক্রবার যেমন দৰিণ আফ্রিকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও স্টেডিয়াম ছিল পরিপূর্ণ। দুই দলকেই সমর্থন দিয়েছে দর্শকরা। ক্রিকেট খেলার মজা পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করেছে।
কিন্তু দিন শেষে রাত আসতে সেই দর্শকরাই আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে পারল না। সেই কষ্ট সবাইকে পুড়িয়েছে। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে আয়োজক বাংলাদেশেরও বিশ্বকাপ শেষ হওয়ায় সবার মনেই কষ্ট জড়িয়ে ধরল। মিলনমেলা ভাঙ্গায় সবাই আবেগাপস্নুত হয়ে গেলেন। বিশ্বকাপে বিদায় বাংলাদেশ। এমন সুরও উঠল। সঙ্গে আইসিসিকে ধন্যবাদও দেয়া হলো। তারাই যে বিশ্বকাপ আয়োজন করার সুযোগটি দিল।
আতশবাজি হচ্ছে। সবাই চিৎকার করছে। চিৎকার শেষ হতেই থমকে গেল সব। বাংলাদেশ থেকে বিদায় হলো বিশ্বকাপ। সব যখন নিশ্চুপ তখন যেন প্রতিটি স্থানেই আওয়াজ, ‘আবার আসিব ফিরে।’ সবার আশা, এটিই যেন সত্য হয়। সেই সত্য নিয়ে অপ্রাপ্তি শেষে প্রাপ্তিই জুটল। আয়োজন শেষে সবার ধারণা আয়োজক বাংলাদেশ সফলই হলো।
Posted in খেলা
মন্তব্য করুন